আটলান্টিক সিটি থেকে সুব্রত চৌধুরী:
১৪ জুন, মঙ্গলবার। খিল ধরা দুপুরে সূর্য দেবতাকে মাথার উপর রেখে ভক্তকূলের পদচারনায় মুখরিত হতে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজারসি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটির ঐতিহাসিক বোর্ডওয়ার্ক। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে ধেয়ে আসা ঊর্মিমালার শব্দ তরঙ্গকে ছাপিয়ে ইথারে ভেসে আসে হরি্নাম সংকীর্তনের সুললিত সুর- ‘হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, হরে রাম, হরে রাম’। অদ্ভুত এক ভালোলাগায় আছন্ন হয়ে পড়ে মন-প্রাণ। আর এসবের উপলক্ষ “নগর সংকীর্তন”, আটলান্টিক সিটির ইতিহাসে যা প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো।
মেঘে মেঘে বেলা বাড়ে, পায়ে পায়ে বাড়ে ভক্তকূলের ভিড়। দুপুর তিনটার পর ঢোল-খোল, মৃদঙ্গের আওয়াজের সাথে তাল মিলিয়ে সম্মিলিত কোরাসে ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হতে থাকে ‘হরে কৃষ্ণ, হরে কৃষ্ণ, হরে রাম, হরে রাম’, আর তা অপূর্ব এক সুর মূর্ছনার সৃষ্টি করে।


বোর্ডওয়াকের মিসিসিপি এভিনিউ থেকে শুরু হয়ে বোর্ডওয়াকের আইওয়া এভিনিউ পর্যন্ত গিয়ে আবার মিসিসিপি এভিনিউতে ফিরে এসে নগর সংকীর্তনের সমাপ্তি টানা হয়।
বোর্ডওয়ার্কে বেড়াতে আসা মার্কিনী সহ ভিনদেশী পর্যটকরা নান্দনিক এই আয়োজনে অভিভূত হয়ে পড়ে। তাদের চলার গতি যায় থেমে। শুদ্ধ-অশুদ্ধ উচ্চারণের সংমিশ্রণে তারা হরিনাম সংকীর্তনে কণ্ঠ মেলায়।আবেগে-উচ্ছ্বাসে-আনন্দে ভক্তকূল নেচে-গেয়ে একাকার হয়ে যায়।
আটলান্টিক কাউন্টির প্রবাসী হিন্দুদের উদ্যোগে আয়োজিত এই নগর সংকীর্তনে নেতৃত্ব দেন পশ্চিম ভার্জিনিয়াস্থ নতুন বৃন্দাবনের ব্রহ্মচারি শুভানন্দ দাস।
উল্লেখ্য, শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু যিনি কলিযুগে স্বয়ং পুরুষোত্তম ভগবান তিনি এই সংকীর্তন আন্দোলন প্রবর্তন করেছিলেন।তাই তিনিই নগর সংকীর্তন আন্দোলনের পিতা।


নিগূঢ় প্রেম আর মধুর হরিনামের যে পবিত্র মালাখানি শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন তা সবার গলায় পরিয়ে দিয়ে একটি সুন্দর ও শোষণহীন সমাজ ব্যবস্হা প্রতিষ্ঠাই এই নগর সংকীর্তনের লক্ষ্য।
নগর সংকীর্তন হিন্দু ধর্মের পুরানো ঐতিহ্য , যা বহুকাল ধরেই চলে আসছে।
আটলান্টিক সিটির পুলিশ কর্মকর্তা সুমন মজুমদার, আটলানটিক সিটি স্কুল বোর্ড সদস্য সুব্রত চৌধুরী,তৃপ্তি সরকার,দীপংকর মিত্র, আন্না মিত্র, উত্তম দাশ, সুভাষ মজুমদার, সজল দাশ, অসীম দাশ, দীপা দে, ইন্দিরা চৌধুরী, বিনোদ ভেলোর,বাদল মহাজন, সুনীল দাশ প্রমুখ নগর সংকীর্তনে অংশ নেন।
নগর সংকীর্তনের আয়োজকরা প্রবাসী হিন্দুদেরকে নগর সংকীর্তনে অংশগ্রহন করে তা সফল করায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন।