কথাসাহিত্যিক সামছুদ্দীন মাহমুদের ২০২২ একুশের বইমেলায় প্রকাশিত গল্পগ্রন্থ “অঝোর প্রেমের গল্প” এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয় ঢাকায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে গত ২১ মার্চ ২০২২। প্রকাশনা সংস্থা স্বদেশ শৈলীর ব্যবস্থাপনায় এবং বিশিষ্ট লেখক ও অনুবাদক অনন্ত উজ্জল এর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং বাংলা একাডেমী পুরষ্কার প্রাপ্ত লেখক ডাঃ মোহিত কামাল। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও সমালোচক রেজা ঘটক, বিশিষ্ট লেখক ও অভিনেতা কচি খন্দকার, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও কবি প্রত্যয় জসিম।



প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে সামছুদ্দীন মাহমুদের লেখার ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, সামছুদ্দীন মাহমুদ হঠাৎ করে লেখক হননি, তার রক্তে লেখা বিদ্যমান। সে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন পত্রিকায় নিয়মিত লেখে আসছে। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তি যুদ্ধের সময় শিশু সামছুদ্দীন মাহমুদকে কোলে পিঠে লালন পালনের স্মৃতি মন্থন করেন(উল্লেখ্য সামছুদ্দীন মাহমুদ লেখক মোহিত কামালের সম্পর্কে ভাতিজা)। তিনি সন্দ্বীপের মাটিকে সাহিত্য উর্বর মাটি উল্লেখ করে বলেন, এখানে অনেক কবি সাহিত্যেকের জন্ম হয়েছে। তিনি মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম থেকে শুরু করে এবারের বাংলা একাডেমী পুরষ্কার প্রাপ্ত কবি আসাদ মান্নান এর কথা উল্লেখ করেন। তিনি সামছুদ্দীন মাহমুদ কে সুন্দর আগামীর আরেকটি প্রত্যাশা বলে উল্লেখ করে বলেন, প্রবাশে বিভিন্ন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও সে যেভাবে তার সাহিত্য চর্চা বজায় রেখেছে, তাতে অচিরেই দেশ আরেকজন উদীয়মান সব্যসাচী লেখককে আবিস্কার করবে। তিনি এভাবে লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার জন্য সামছুদ্দীন মাহমুদের প্রতি অনুরোধ করেন।



বিশিষ্ট সমালোচক রেজা ঘটক বলেন, লেখক সামছুদ্দীন মাহমুদের সাথে আমার ব্যক্তিগত কোন পরিচয় নাই। এমনকি দুদিন আগেও তাকে আমি চিনতাম না। কিন্তু এখন তার লেখার মাধ্যমে তার সাথে পরিচিত হলাম । সব লেখকরা যেহেতু জাত ভাই। সেহেতু তিনিও জাত ভাই। কিন্তু সমালোচনা করতে আম ভাই অথবা বন্ধুকেও আমি ছেড়ে কথা বলিনা। লেখকের “অঝোর প্রেমের গল্প” এর কয়েকটি লেখা আমি পড়েছি। পৌরুষ গল্পটিতে মনে হয় শেষটাই কেবল শুরু হলো। এটাই একজন ছোট গল্পকারের স্বার্থকতা। প্রত্যেকটি গল্পই আমাদের চারপাশের প্রেম, ভালবাসা ও বিরহের। লেখক খুবই সুচারূরুপে তা ফুটিয়ে তুলেছেন। তবে তার আগামী লেখাগুলোতে আমরা আমাদের চারপার্শ্বের প্রকৃতি, সাগর, নদী, পশুপাখী ইত্যাদি নিয়ে আরো বিশদ লেখা চাই। তিনি পুরো বইটির উপর একটি সাহিত্য সমালোচনা লেখার ও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।


বিশিষ্ট অভিনেতা কচি খন্দকার বলেন, এখানে বসেই আমি লেখকের দুটি গল্প পড়েছি। কোনক্রমেই লেখককে নতুন বলে মনে হয়নি। তিনি ভবিষ্যতে আরো লেখালেখি চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
বিশিষ্ট কবি প্রত্যয় জসিম বলেন, সামছুদ্দীন মাহমুদ ও আমি একই সাবজেক্টে মাস্টার্স করেছি। পুর্বেও তার লেখালেখির খুব হাত ছিল। সে যে প্রবাশে থেকে তার লেখালেখি বজায় রেখেছে তার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে লেখক কেবল ছোটগল্প নয়, উপন্যাস, কবিতা ইত্যাদিতেও তার বিচরণ অব্যাহত রাখবে বলে আশা করেন।
লেখক সামছুদ্দীন মাহমুদ, সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে খুব স্বল্প সময়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য স্বদেশ শৈলী বিশেষ করে এর প্রকাশক এন্থনী গোমেজ, মৃদুল রহমান ও অনন্ত উজ্জলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিশেষ করে সকলের সমালোচনা মাথায় নিয়ে ভবিষ্যতে আরো অধিক হারে লেখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তিনি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। সুদুর ওয়াশিংটন থেকে আগত তার স্ত্রী স্যাম রিয়া ও কন্য সামায়লা মাহমুদ এর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।