স্টাফ রিপোর্টার: তিনি লিখেছিলেন, ‘আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না’। গেল না! সত্যিই আর ফেরানো গেল না তাকে। মৃত্যু নামের চিরন্তন সত্যকে আলিঙ্গন করে চলে গেলেন অনেক কালজয়ী গানের গীতিকার কাওসার আহমেদ চৌধুরী। গত মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর একটি হাসাপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। গতকাল বুধবার তাকে সমাহিত করা হয়েছে আজিমপুর কবরস্থানে। সকাল ৯টায় ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় কাওসার আহমেদ চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। জানা গেছে, তার শেষ ইচ্ছে ছিল আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত হবেন। তার সেই ইচ্ছে পূরণ করেছে পরিবার। এ সময় পরিবার ও আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তবে সংগীতাঙ্গণের ফুয়াদ নাসের বাবু, সামিনা চৌধুরী, গায়ক শাহেদ, পঞ্চম, সুজন আরিফ ছাড়া আর কাউকে না পেয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে কাওসার আহমেদ চৌধুরীর পরিবার। এই গীতিকবি অনেকদিন ধরেই কিডনি, প্রেশার ও স্নায়ুজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। দুইবার স্ট্রোকের শিকার হন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্যালিয়েটিভ সেন্টারে ভর্তি করা হয়। পরদিন তাকে ধানমন্ডি ক্লিনিকে স্থানান্তর করা হয়। এর মধ্যে তিনি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হন। একপর্যায়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার রক্তে হিমোগ্লোবিন মাত্রাতিরিক্ত কমে যাওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে রক্ত সরবরাহ করা হয়। নন্দিত গীতিকবি কাওসার আহমেদ চৌধুরীর লেখা গান গেয়েছে ব্যান্ডদল ফিডব্যাক, এলআরবি, মাইলস, লাকি আখন্দ, কুমার বিশ্বজিৎ, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, সামিনা চৌধুরী মতো স্বনামধন্য শিল্পীরা। তার লেখা উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে মনে পড়লো তোমায়’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার, সেখানেই বসন্ত আমার’, ‘কবিতা পড়া প্রহর এসেছে’, ‘এক ঝাঁক প্রজাপতি ছিলাম আমরা’, ‘এলোমেলো বাতাসে’ ফিডব্যাক ব্যান্ডের ‘মৌসুমি কারে ভালোবাসো তুমি’ ও এলআরবি’র ‘রুপালি গিটার ফেলে’ প্রভৃতি। কাওসার আহমেদ চৌধুরী জ্যোতিষী হিসেবেও বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি সংবাদপত্রে নিয়মিত রাশিফল লিখতেন। এছাড়াও তিনি টেলিভিশনের অনুষ্ঠান নির্মাতা। বেশ কিছু টিভি নাটক রচনা ও পরিচালনা করেছেন তিনি। বিজ্ঞাপনচিত্রও নির্মাণ করেছেন।
গীতিকার কাওসার আহমেদ চৌধুরীর দাফন সম্পন্ন
আরও খবর